পৃথিবীতে হাজার হাজার জনপদ সৃষ্টি হয়েছে কলক্রমে মানুষের ছোয়াতে, মানুষের হাতের স্পর্শ। মানুষ কালক্রমে গড়ে তুলেছে জঙ্গল থেকে আলোক ঝলমলে জীবন্ত নগরী। হয়তো সেখানে ছিলো একদিন অন্ধকারাচ্ছন্ন মানুষহীন গভীর অন্ধকূপ। কিন্তু মানুষের ছোয়াতেই সে অন্ধকারময় অবহেলিত স্থান হয়ে গেছে জাকজমকপূর্ন কোনো এক জীবন্ত নগরী।
কিভাবে নগরীর সৃষ্টি হয়েছে ইতিহাস ঘাটলে তার কোনো কোনোটির হদিস পাওয়া যায় আবার কোনো কোনোটির হদিস আমরা পাইনা। তবে আমরা বিভিন্ন ভাবে গবেষণা করে বলতে পারি যে এই জনপদের অবস্থা এমনটি ছিলো।
আমি আজ আমার বাস্তব অভিজ্ঞতার আলাকে আপনাদেরকে জানাবো, আমার ভবিষ্যত প্রজন্জকে জানানো এমন একটি ছোট্ট জনপদের সূচনা লগ্নের কথা। খিলবো কিভাবে রূপনগর গ্রামটির সৃষ্টি হয়েছিলো এবং এর নামকরণই বা কে বা কারা করলো। জানি একদিন আমার এ লেখা ইতিহাস হয়ে সাক্ষ্য দিবে এ জনপদের লোকজনদের কাছে। আমার বয়স তথন ১৭/১৮ হবে। তথন আমরা বসবাস করতাম ফোর্ডনগর ফকির পাড়ায়, বর্তমানে দারুগালি ও আলম ভাই যে বাড়িটায় আছেন। বাড়িটার উত্তর দিকে খালের মতো ছোট্ট জলাশয়। বর্ষা মৌসুমে জলাশয়টা বিস্তার লাভ করলেও শুকনো মৌসুমে মৃতপ্রায় আকার ধারন করতো।
তবে এ জলাশয়ের পূর্ব দিকের প্রবেশদ্বার সারা বছরই বংশাই নদীর সাথে মিলিত থাকতো কিন্তু কিছুদূর প্রবাহিত হয়ে এর পশ্চিম প্রান্তের মুখটি বন্ধ হয়ে যেতো। শুধু মাঝখানের অংশে সারা বছর কিছু পানি জমে থাকতো। এ অবস্থা অবশ্য বর্তমানেও বিদ্যমান রয়েছে। এই খালটির উত্তর প্রান্তে রয়েছে বিস্তার চারণভুমি। এ চরের পূর্ব দিকে বংশাই নদী। পশ্চিমে বহুদূর পর্যন্ত ধানের আবাদি জমি এবং এর আরো দূরে হয়েছে গ্রামাঞ্চল। এর উত্তরে কাজিয়ারকুন্ড। ঐ গ্রাম বেয়ে বেরিয়ে এসেছে একটি সড়ক যা বর্তমানে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।
এই চরে আমাদের কিছু বর্গা জমি ছিলো। সাভারের ললিতবাবু এই জমির মালিক ছিলেন। বাবাকে তিনি খুব বন্ধুশোলভ জানতেন। ললিতবাবুর কোনো সন্তান ছিলোনা। আমার মনে আছে, উনার বাড়িটাকেই ছোট্ট একখানা চিড়িয়াখানা বানিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির পশু-পাখি লালন-পালন করতেন তিনি।
আমরা ললিতবাবুর এই জমিটা বহুদিন ধরে চাষাবাদ করে আসছিলাম। এখানে প্রায় ১৩/১৪ পাখি জমি (২৬ শতাংশ সমান এক পাখি) আমরা চাষ করতাম। আজকের রূপনগর গ্রামটি অবস্থিত তার কেন্দ্রস্থলেই এই জমিটা রয়েছে। আমার পরিষ্কার মনে আছে এই চরে তখন বহুদূর বিরান ভুমি ছিলো। নদীর তীর ধরে পলিমাটিতে বোরো ধান চাষ করা হতো। আমরা এই জমিতে মূলত শাকসব্জি চাষ করতাম। এখানে প্রধান ফসল ছিলো- বাঙ্গি, বেগুন, শশা, এছাড়া টমেটো, চাল কুমড়া, খিরাই, পুইশাক, লালশাক, বরবটি, ঝিঙ্গা, পিয়াজ, রসুন ইত্যাদিও চাষাবাদ হতো। এই চরে আমরাই মূলত এ সব ফসল ফলাতাম। তবে সারা বছর এ চরে ফসল ফলতো না। কারন, বর্ষা মৌসুমে এ চরটা সম্পূর্ন তলিয়ে যেতো বন্যার পানিতে। তবে এসব জমিতে তখন ধঞ্চে বোনা থাকতো। মাঝে মধ্যে আমন ধানও থাকতো। শীত মৌসুমে চরে ফসল বুনার ধুম পড়ে যেতো। ১৩/১৪ পাখি জমির অধিকাংশ জুড়েই চিনাল ভাংগির ফসল থাকতো। যখন এসব ফসল পাকতে শুরু করতো তখন ক্ষেতে পাহারার ব্যবস্থা করতে হতো। কারন, আমাদের ফসলের ক্ষেত বরাবর বংশাই এর পূর্ব পাড়েই বেদে পরিবারের বসবাস। যাকে আমরা বেদেপাড়া হিসেবে চিনি। যখন বাংগি পাকা শুরু করতো তথন বেদে ছেলেমেয়েরা দল বেঁধে নদী সাঁতরিয়ে বাংগি খেতে এই চরে আসতো। খাওয়ার চেয়ে নষ্টই করে ফেলতো বেশি।ওদের উপদ্রপ থেকে রক্ষার জন্য ক্ষেতে পাহারা দিতে আসতে হতো আমাদেরকে। আমাদের বাড়ি থেকে হাকডাক দিতে দিতে অনেক গুলি বাংগি চুরি হয়ে যেতো। আর এ পারে আসতে আসতে ওরা সাঁতরিয়ে ওঠে পড়তো। এভাবে ওদের ধরা খুবই মুশকিল হতো। দুপুর রোদে অনেক সময় একা একা ক্ষেতে পাহারা দিতে আসতে চাইতামনা। কিন্তু দুএকজন সঙ্গী-সাথী সাথে পেলে তখন আর বারন খাকতো না। ঐ সময়ে আমার একমাত্র ঘনিষ্ঠ বন্ধু বললে সুহিনই ছিলো (আজ সুহিন প্রয়াত)। তো সুহিনকে সাথে পেলে নাচতে নাচতেই চলে আসতাম।
সাভার বাজার সংলগ্ন বংশী নদীর পূর্ব পাড়ে অবস্থিত রূপনগর।---- স্যাটেলাইট ভিউ
আমরা অনেক সময় সাথে করে কিছু খাবার পানি এবং ২/১ টা পাত্র নিয়ে আসতাম। কারন, দুপুর রোদে টমেটো বর্ত্তা করে খেতে খুব মজা হতো। দুপুর রোদে শশার মাচার ছায়ায় বসে বসে ক্ষেত পাহারা দিতাম। আজ যেখানে আমাদের জামে মসজিদটি রয়েছে সেখান হতে একটু উত্তর দিকে নদীর পাড় ঘেঁষে ঘন কাঁশবন ছিলো সারি সারি। এই কাঁশবনে বাবুই পাখিদের আস্তানা ছিলো। সারাক্ষন কিচির মিচির শব্দে মাতিয়ে রাখতো জনশূন্য নদীর পাড়টাকে। আমরা ঐ ঘন কাঁশবনে একা কখনো যেতে সাহস পেতামনা। কারন, শুধু যে বাবুই পাখিদের বাসাই ছিলো তাই না, ওখানে ছিলো শেয়াল পন্ডিতের বসত ভিটা। তাছাড়া সাপ পোকেরও ভয় ছিলো।
একটি মজার ঘটানার কথা মনে পড়ে গেলো। সেদিন চকে এসেছিলাম সুহিনসহ আরো কয়েকজন সমবয়সী ছেলেরা। সবাই বুদ্ধি আটলাম, আমরা আজ কাঁশবনে ঢুকবো এবং বাবুই পাখির বাসা থেকে ডিম পেড়ে নিয়ে আসবো। যা ভাবা তাই কাজে পরিনত করলাম। সবাই মিলে দল বেঁধে ঢুকলাম। খুব আস্তে আস্তে একপা দুপা করে কাঁশবনে ঢুকে পড়লাম।
: ইশ কত বাসা !
: হ্যাঁ ডিমও আছে প্রায় সবগুলোতেই।
আনন্দে সবাই আঠখানা, এভাবে একেকজন একেকভাবে আনন্দে হৈ হুল্লা করতে লাগলাম। অবশেষে প্রায় ২/৩ মুঠো ডিম নিয়ে আমরা বেরিয়ে এলাম কাঁশবনের ঝোড় থেকে।এরপর সবগুলো ডিম ভেংগে একটা পেয়ালায় একত্রিত করলাম। প্রায় অর্ধেক পেয়ালা ভরে গেলো। শেষে পেঁয়াজ-মরিচ দিয়ে ভাঁজলাম এবং কত স্বাদ করে যে খেয়েছিলাম যা আজো মনে পড়ে। তখন ইচ্ছে হয় আবার সেই ডানপিটে দূরন্ত দিনগুলোতে ফিরে যাই এক দৌড়ে।
যা বলতেছিলাম, তো—আমরা এ জমিটা বেশ কয়েক বছর এভাবে চাষাবাদ করি। ১৯৯৪ সালে আমাদের বাড়িটা বিভিন্ন কারন বশত বিক্রি করে দিতে হয়। তখন বাবা সিদ্ধান্ত নেন এই চকে এসে বাড়ি করবেন। আমরা কথাটা শুনে সবাই চুপ হয়ে গেলাম। কেউ-ই রাজি হলামনা এ ধুধু চকে বাড়ি করতে কিন্তু এক রকম সকলের অমতে তার সিদ্ধান্ত অটুট রাখলেন।
সেদিন ছিলো বুধবার, ৭ ডিসেম্বর, ১৯৯৪। ধুধু করছে চারপাশ। মাঝখানে আমাদের বাড়ি। আগের বাড়িতে বিদ্যুত ছিলো কিন্তু এখানে ঘুটঘুটে অন্ধকার, আনকোঁড়া এক অভিজ্ঞতা। একদিনেই বাড়ির সবকিছু স্থানান্তরিত করা হলো। এভাবে এক বিরান চকের মাঝখানে বসবাস করতে লাগলাম। দূর থেকে যে-ই দেখতো, তারা বলতো—ঐ চকে কে বাড়ি করলো, কোনো দুর্দান্ত লোক ছাড়া তো কল্পনাও করা যায়না। কারন কোনো ডাকাত-টাকাত না হলে এমন শুকনো চকে এসে বাড়ি করবে কে।এভাবে ৫/৬ মাস অতিবাহিত হয়ে গেলো।
তখনও আমরাই এই চরে একমাত্র বাসিন্দা। অনেকের অনেক মন্তব্যের মুখোমুখি হতে হয় রাস্তা-ঘাটে। কেনো চরের মধ্যে বাড়ি করলাম, কেনো রাজধানীর মতো সোনার বাড়িটা বিক্রি করে শুকনো চরে গিয়ে বসতি গড়লাম ইত্যাদি নানা প্রশ্নের সম্মুখিন হতে হতো প্রায়শই। উল্লেখ্য, আমরা যে বাড়িটা বিক্রি করে এই চরে বাড়ি করি, ঐ বাড়িটা সত্যিই ছিলো ঐ এলাকার ভেতর রাজধানীর মতো জমজমাট। বাড়ির পাশ দিয়েই চলে গেছে রাস্তা, বিদ্যুত ছিলো তাছাড়া অনেক লোকের যাতায়াত ছিলো আমাদের সেই পুরোনো বাড়িটায়। দূর-দূরান্তের কেউ অচেনা লোকও দেখেছি আমাদের বাড়িতে পানি খেতে আসতো, কেউ আসতো নামাজ পড়তে আবার শনি আর মঙলবার তো সাইকেল আর মটর সাইকেলের গ্যারেজ হয়ে যেতো আমাদের পুরো বাড়িটাই। কাউকে মানা করতাম না, সব ধরনের মানসিক সেবা পেতো আমাদের ঐ বাড়িটাতে। আর তাই অনেকে দু:খ করেও বলতো কিসের জন্য আমরা এই সিদ্ধান্ত নিলাম, বাড়িটা বিক্রি করে দিয়ে চরে গিয়ে উঠলাম।
শীত মৌসুমে আমরা এই নতুন বাড়িটা করি। ঐবার অর্থাত ওবছর (বর্ষা আসার পূর্বে) এই চরে আমরা প্রায় একাই বসবাস করতে লাগলাম। বর্ষার পানিটা নেমে যাবার পর চরটা শুকনো হলো। অনেকের আগ্রহ বাড়লো। ৩/৪টা বাড়ি হয়ে গেলো। আমরা যখন একা একা একবছর কাটাই তখন থেকেই এই গ্রামের নাম রূপনগর বলে অনেকেই বলতে থাকে। “রূপনগর” নামকরনের পেছনেও যথেষ্ট যুক্তি রয়েছে। আপনাদের মনে পরে কিনা; বাংলাদেশ টেলিভিশনে ১৯৯৪ তে একটি ধারাবাহিক নাটক প্রচারিত হয়ে হয়, যা নাকি ঐসময়ে বিশেষ আলোড়ন সৃষ্টি করে জনমনে। ঐ নাটকটির নামছিলো “রূপনগর”। নাটকটির প্রেক্ষাপট এই নতুন বাড়িঘর করার সাথে কিছুটা মিল ছিলো। অর্থাত নাটকের নায়ক তৌকির আহম্মেদ সন্ত্রাসীদের ভয়ে আশ্রয় নেয় শহর থেকে দূরে নদীর তীরবর্তী একটি গ্রামে, যার নাম ছিলো রূপনগর.... এই ভাবে নাটকটি আরো কিছু দূর এগিয়ে যায়। নাটকটির প্রতিটি পর্বই ছিলো কৌতূহলপূর্ন এবং রহস্যময়। অর্থাত এক পর্ব শেষ হলে পরবর্তী পর্বের জন্য দিন গুনতে হতো আগামী এক সপ্তাহ পর্যন্ত। আমার মনে হয় বাংলাদেশের ৮০% মানুষই (যারা টিভি দেখেন)রূপনগর নাটকটির দর্শক ছিলো।
উল্লেখ্য, এই নাটকটিকে কেন্দ্র করে মজার একটি ঘটনা ঘটে ছিলো যা না বলতে পারলে নাটকটি যে কতখানি জনপ্রিয় হয়েছিলো তা আপনাদের কাছে পরিস্কার হবেনা। সেদিন ছিলো নাটকটির শেষ পর্ব। রাত ৯টায় সম্প্রচার হতো নাটকটি। তখন ঘড়ির কাটায় সময় রাত প্রায় ৯টা। তার কিছুক্ষন পূর্বে হালকা করে একটু বৃষ্টি হয়ে যায়। আমরা তখন এখানে বাড়ি করিনি।সবাই টিভি সেটের সামনে, এক্ষনি শুরু হবে নাটকটি- ঠিক এমন সময় বিদ্যুত চলে গেলো। আর তখনই ঘটলো মজার কান্ড। একযোগে ফোর্ডনগর গ্রামের আবাল-বৃদ্ধ সবাই যারা টিভি সেটের বসা ছিলো সবাই খেয়াঘাটে চলে এলো সাভার গিয়ে নাটকটির শেষ পর্ব দেখার জন্য।
এই হুড়হুড়িয়ে বেরিয়ে আসার দৃশ্যটা ছিলো ঠিক হেমিলনের বাশিওয়ালার পেছনে পেছনে যেভাবে ছুটে গিয়েছিলো ঐ শহরের ছোট ছোট বাচ্চারা ঠিক তেমন ভাবে আমরা সবাই খেয়াঘাটে এসে উপস্থিত হলাম। ঘাটে তখন ২/১টা নৌকা বেড়ানো ছিলো। ওসব নৌকার ধারণ ক্ষমতা ছিলো সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১২ জন কিন্তু সেখানে ওঠার চেষ্টা করে প্রায় ২০/২৫ জন করে। আর ফলশ্রুতিতে যা হবার তাই, অর্থাত একে একে ঘাটের তরী ঘাটেই ডুবিয়ে দিলো সবকটি।নাটকটি তো কোনো ভাবে মিস করা যাবেনা। আমরা কজন খালের ভেতর থেকে একটি সেলু নৌকা (ইঞ্জিন চালিত মাঝারি নৌকা)আস্তে আস্তে খালের সরু মোহনা দিয়ে বের করে নিয়ে এলাম। এভাবে সবাইকে কৌশলে ফাকি দিয়ে আমরা বেশ কয়েকজন নদী পাড় হয়ে চলে এলাম সাভার। ঘাট থেকে বাজারে ওঠার রাস্তাটি ছিলো উচ্চু এবং ঢালু। কিছুক্ষন পূর্বেই হয়েছিলো বৃষ্টি। এই ঢালু পথটুকু হয়ে গেছে পিচ্ছিল আর কর্দমাক্ত।তাড়াতাড়ি করে ওঠতে গিয়ে আমাদের কয়েকজন ওখানেই চিতপাটাং।কিন্তু শেষ পর্যন্ত যেভাবেই হোক দেখেছিলাম নাটকটির শেষ পর্ব।
সুতরাং বাড়ি করার পরপর অনেকেই ঐ রূপনগর নাটকটির নামানুসারে আমাদেরকে রূপনগরের বাসিন্দা বলে ডাকতে থাকে। অনেকে ব্যঙ্গ করেও বলতো- তোমরা কি রূপনগরের লোক। কারন ছিলো, এই ধুধু চরে আমাদের একটা মাত্র বাড়ি আর ঐ একটা বাড়ি দিয়ে একটা গ্রামের স্বপ্প দেখাও সেদিনের জন্য ছিলো বেমানানসই। তাছাড়া আমাদের কাছেও গ্রামের নাম রূপনগর পরিচয় দিতে কেমন যেনো লাগতো। একবার একটা নামফলক ঝুলিয়ে দিয়েছিলো ওপারের (ফোর্ডনগর) বোরহান উদ্দিন ফকিরের মেয়ের ঘরের নাতি শাহিন। ওটাতে লেখাছিলো- “এই গ্রামের নাম রূপনগর, নামকরনে- শাহিনুর রহমান শাহিন।’’
আজ রূপনগর গ্রামের নামটি চলে গেছে সরকারী খাতায়। গ্রামের নামানুসারে ভোটা তালিকায় নথিভুক্ত করা হয়েছে এই জনপদে বসবাসরত নাগরিকবৃন্দকে। দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে যাচ্ছে এর ব্যাপ্তি। এখানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে- রূপনগর জামে মসজিদ, যার পেছনে মূখ্য ভূমিকা রেখেছিলেন আমার বাবা মর্হুম জনান মো. মগর আলী। এখানে স্থায়ী ভাবে বসেছে খেয়াঘাট। শহরের কোলাকল মুক্ত একটি গ্রামীন জনপদ চিহ্নিত করে দূরদূরান্ত থেকে লোকজন এখানে বসতবাড়ি গড়ে তুলছে। শহরের পাশে অবস্থিত বলে যোগাযোগের কোনো অসুবিধা হয়না। বংশী নদীতে একটি সেতু হয়ে গেলে রূপনগর হতে পারে একটি উপযুক্ত আবাসিক এলাকা। রূপনগরের বর্তমান লোক সংখ্যা আনুমানিক হাজারের কাছাকাছি। আজকের বাসিন্দাদের অনেকেই জানেনা এই জনপদের সৃষ্টির ইতিকথা। আমার এই প্রয়াশটুকু নিবেদন করলাম- কৌতুহলপূর্ন পর্যটক এবং নতুন আগন্তুকদের জন্য।