শিশুকাল________________________________________________________________________
জন্ম তারিখঃ ১ বৈশাখ ১৩৮৩ বাঙ্গাব্দ
১৪ এপ্রিল ১৯৭৬ খৃস্টাব্দ
সময়ঃ ভোর বেলা।
রোজঃ বুধবার
রক্তের গ্রুপঃ এ পজেটিভ
জন্মস্থানঃ পৈত্রালয়
ঠিকানাঃ গ্রাম- চর ফোর্ডনগর (ভূতা পাড়া), ডাক. ধল্লা বাজার, থানা- সিংগাইর, জেলা- মানিকগঞ্জ।
নামঃ মো. ফারুক হোসেন
পিতার নামঃ মো. মগর আলী
মাতার নামঃ মোসা. হাজেরা খাতুন
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির পূর্ব শৈশব কাল____________________________________________________
বাংলা সনঃ ইংরেজি সনঃ বয়সঃ বিবরনঃ
১৩৮৩ ১৯৭৬ ০ : জন্মস্থানে
১৩৮৪ ১৯৭৭ ১ : ,,
১৩৮৫ ১৯৭৮ ২ : ,,
১৩৮৬ ১৯৭৯ ৩ : ,,
১৩৮৭ ১৯৮০ ৪ : বাসস্থান পরিবর্তন
---নতুন ঠিকানা----
গ্রামঃ ফোর্ডনগর ফকির পাড়া
ডাকঘরঃ রোয়াইল, থানাঃ ধামরাই, জেলাঃ ঢাকা।
১৩৮৮ ১৯৮১ ৫ : ,,
১৩৮৯ ১৯৮২ ৬ : ,,
১৩৯০ ১৯৮৩ ৭ : ,,
১৩৯১ ১৯৮৪ ৮ : ,,
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অতিবাহিত সময়_____________________________________________________
সনঃ ১৩৯২ বাং ১৯৮৫ ইং
বয়সঃ ৯
সনঃ ১৩৯৩ বাং ১৯৮৬ ইং
বয়সঃ ১০
সনঃ ১৩৯৪ বাং ১৯৮৭ ইং
বয়সঃ ১১
এক বছর পড়াশোনা হলো মাদ্রাসায়। বার্ষিক পরীক্ষার সময় হলো। পরীক্ষায় পাশ করে তৃতীয় শ্রেণীতে উর্ত্তীণ হলাম। তৃতীয় শ্রেণীতে আমার রুল নং কত ছিল মনে নেই।
সনঃ ১৩৯৫ বাং ১৯৮৮ ইং
বয়সঃ ১২
বয়স দাঁড়ালো আঠাইশে। কম্পিউটার সেন্টার ছেড়ে দিয়ে বড় ভাই আব্দুর রশিদের সহায়তায় সংযুক্ত আরব আমিরাতে পাড়ি দিলাম। যাত্রা শুরু প্রবাস জীবনের। ৫ ফেব্রয়ারি, ২০০৪ বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে ঢাকা জিয়া আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে মুম্বাই ছত্রপতি বিমান বন্দর হয়ে দুবাই আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে অবতরণ। আমাকে রিসিভ করার জন্য বড় ভাই এবং তার এক বন্ধু বিমান বন্দরে অপেক্ষায় ছিলেন। আমাকে রিসিভ করে সরাসরি নিয়ে আসেন দুবাই গ্র্যান্ড হোটেলে এবং হোটেলের ফাইন্যান্স কন্ট্রোলারের সাথে সাক্ষাত করান।
ইনশাআল্লাহ চলবে....
জন্ম তারিখঃ ১ বৈশাখ ১৩৮৩ বাঙ্গাব্দ
১৪ এপ্রিল ১৯৭৬ খৃস্টাব্দ
সময়ঃ ভোর বেলা।
রোজঃ বুধবার
রক্তের গ্রুপঃ এ পজেটিভ
জন্মস্থানঃ পৈত্রালয়
ঠিকানাঃ গ্রাম- চর ফোর্ডনগর (ভূতা পাড়া), ডাক. ধল্লা বাজার, থানা- সিংগাইর, জেলা- মানিকগঞ্জ।
নামঃ মো. ফারুক হোসেন
পিতার নামঃ মো. মগর আলী
মাতার নামঃ মোসা. হাজেরা খাতুন
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির পূর্ব শৈশব কাল____________________________________________________
বাংলা সনঃ ইংরেজি সনঃ বয়সঃ বিবরনঃ
১৩৮৩ ১৯৭৬ ০ : জন্মস্থানে
১৩৮৪ ১৯৭৭ ১ : ,,
১৩৮৫ ১৯৭৮ ২ : ,,
১৩৮৬ ১৯৭৯ ৩ : ,,
১৩৮৭ ১৯৮০ ৪ : বাসস্থান পরিবর্তন
---নতুন ঠিকানা----
গ্রামঃ ফোর্ডনগর ফকির পাড়া
ডাকঘরঃ রোয়াইল, থানাঃ ধামরাই, জেলাঃ ঢাকা।
১৩৮৮ ১৯৮১ ৫ : ,,
১৩৮৯ ১৯৮২ ৬ : ,,
১৩৯০ ১৯৮৩ ৭ : ,,
১৩৯১ ১৯৮৪ ৮ : ,,
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অতিবাহিত সময়_____________________________________________________
সনঃ ১৩৯২ বাং ১৯৮৫ ইং
বয়সঃ ৯
আমাকে প্রথম শ্রেণীতে ভর্তি করা হয় পার্শবর্তী চৌটাইল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ফোর্ডনগর থেকে উত্তর পশ্চিম দিকে মেঠুপথ দিয়ে হেঁটে হিন্দুপাড়া হয়ে পৌছতাম বিদ্যালয়ে। তবে খুব বেশি দিন চৌটাইল স্কুলে পড়াশোনা হয়নি আমার। কিছুদিন পর আমাকে ভর্তি করে দেয়া হয় সাভার নামা বাজারস্থ সাভার আলিয়া মাদ্রাসায়।
সনঃ ১৩৯৩ বাং ১৯৮৬ ইং
বয়সঃ ১০
ছোট সময় মা নাকি মানত করেছিলেন আমাকে মাদ্রাসায় পড়াবেন। বড় ভায়েরও একই ইচ্ছা ছিল। তাই আমাকে স্কুল থেকে মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়ে দিল। আমার মনে আছে বড় ভাই আব্দুর রশিদ একদিন সকাল বেলা আমাকে নিয়ে বেরুলেন এবং সাভার নামা বাজারস্থ সাভার সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় (আলিয়া মাদ্রাসা) ভর্তি করিয়ে দেন। আমাকে ২য় শ্রেণীতে ভর্তি করানো হয়। ভর্তি রুল নং ছিল ২৮।
সনঃ ১৩৯৪ বাং ১৯৮৭ ইং
বয়সঃ ১১
এক বছর পড়াশোনা হলো মাদ্রাসায়। বার্ষিক পরীক্ষার সময় হলো। পরীক্ষায় পাশ করে তৃতীয় শ্রেণীতে উর্ত্তীণ হলাম। তৃতীয় শ্রেণীতে আমার রুল নং কত ছিল মনে নেই।
সনঃ ১৩৯৫ বাং ১৯৮৮ ইং
বয়সঃ ১২
এ বছর আমি চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র। পাঞ্জাবী টুপি এবং পাজামা পরে প্রতিদিন সকাল আটটায় বের হতাম মাদ্রাসার উদ্দ্যেশে। আমাদের ক্লাশ শুরু হতো সকাল ৯টা থেকে, চলতো দুপুর ১টা পর্যন্ত। ১৯৮৮ সনে দেশে স্মরণকালের এক ভয়াবহ বন্যায় প্লাবিত হয় প্রায় সারা দেশ। এ সময় আমাদের মাদ্রাসা অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। দেশের প্রায় সর্বত্র দুর্যোগপূর্ন অবস্থার সৃষ্টি হয় এই বারের বন্যায়। আমার পরিস্কার মনে আছে, সাভারের অতিগলি বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়। আমাদের বাড়ির উঠান ঘর সব জায়গায় পানি ওঠে পড়ে। পানি ঘরের ভেতর ঢুকে পড়লে আমরা স্থানান্তরিত হয়ে পার্শবর্তী বোরহান ফকির কাকার বাড়িতে ওঠি প্রয়োজনীয় মালামাল নিয়ে। কিন্তু বন্যার পানি আরো বাড়তে লাগলো। আমরা এখানেও থাকতে পারলাম না। একটা সেলু নৌকায় করে গরু-বাচুর আর আমরা বাড়ির সবাই চলে এলাম আমাদের পূর্বের গ্রাম চর ফোর্ডনগরে। এখানে আমরা আনোয়ার (অনু) কাকার বাড়িতে ওঠলাম। আমার মনে হয় আমরা অনু কাকার বাড়িতে প্রায় ১০/১৫ দিন ছিলাম। পানি কমে এলে আমরা বাড়িতে ফিরতে লাগলাম। অনু কাকার যে ভিটায় আমরা ওঠেছিলাম মূলত এটাই ছিল আমার জন্মস্থল। একদিন এই বাড়ি এবং এই উঠানেই হামাগুড়ি দিতে দিতে চলতে শিখেছিলাম। অনু কাকার কাছে এই বাড়ি বিক্রি করে দিয়ে আমরা ফোর্ডনগর (ফকির পাড়া) বাড়ি করি।
সনঃ ১৩৯৬ বাং ১৯৮৯ ইং
বয়সঃ ১৩
তেরো বছর বয়সে এ যুগের ছেলেমেয়েরা এসএসসি পরীক্ষা দেয় আর আমি কিনা তেরোতে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র। একটু বড় সড় হয়ে গেলেও ছাত্র হিসেবে খারাপ ছিলাম না কখনোই। বরাবরই পাশ করেছি। পঞ্চম শ্রেণীতে আমার রোল নং ছিলো বারো। আর কিছু মনে পড়ে না।
সনঃ ১৩৯৭ বাং ১৯৯০ ইং
বয়সঃ ১৪
এবছর আমি ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র। ষষ্ঠ শ্রেণীতে আমার রোল হলো এগারো। বালক মন, নানা খেলাধুলায় কাটতো সারা বেলা। আমার পড়ার কোনো টেবিল ছিলোনা। আমার বই-পুষ্তক রাখতাম একখানা স্ট্রীলের ট্রাংকে। সন্ধ্যা বেলা পড়তে বসতাম সেই ট্রাংখানা খুলে। আমার যাবতীয় প্রয়োজনীয় জিনিষপত্র ওই ট্রাংকেই রেখে দিতাম। আমার পড়ালেখার কোনো চাপ ছিলোনা। আমি নিজের ইচ্ছায় পড়তে বসতাম আবার নিজের ইচ্ছাতেই পড়া থেকে ওঠতাম। বাবা কিংবা মা অথবা বড় ভাই কেউ কোনো দিন পড়ার জন্য শাসন করেনি। আমি ছোট বেলা থেকেই ছিলাম স্বাধীনচেতা। সুন্দরের পূজারী ছিলাম জ্ঞান হওয়ার পর থেকেই। পড়াশোনার পাশাপাশি কুটির শিল্পে বেশ আগ্রহী ছিলাম। পাখা বানানো, রোমালে ফুল তোলা, মাটি দিয়ে পুতুল বানানো, কুশিকাঁটা দিয়ে টুপি, গেঞ্জি ইত্যাদিও করেছি এই সময়। আর্টের প্রতি বেশ নেশা ছিলো। রং পেন্সিল দিয়ে সুন্দর সুন্দর বাণী আর্ট করে পড়ার ঘরে টাঙ্গিয়ে রাখতে পছন্দ করতাম। আবার সহপাঠী ও বন্ধুদেরকেও বাণীচিরন্তনী আর্ট করে উপহার দিতাম।
সনঃ ১৩৯৮ বাং ১৯৯১ ইং
বয়সঃ ১৫
সনঃ ১৩৯৯ বাং ১৯৯২ ইং
বয়সঃ ১৬
সনঃ ১৪০০ বাং ১৯৯৩ ইং
বয়সঃ ১৭
এ বছর দেশে ভয়াবহ বন্যা কবলিত হয়। প্লাবিত হয় দেশের অধিকাংশ জেলাগুলো। আমাদের বাড়িতে বন্যার পানি ঢুকে করে। ওঠান ছাড়িয়ে বন্যার পানি প্রবেশ করে ঘরে। আমার পড়ার রুমে পানি ছিলো খাটের নিচে আর চার আঙ্গুল পানি বাড়লে আমার শোবার বিছানা ভিজে যেতো বন্যার পানিতে। এই বন্যায় অনেক ক্ষতি সাধিত হয়। বন্যার আগে আমাদের সাথে এক জীন হুজুরের পরিচয় ঘটে। ওই জিন হুজুরের পাল্লায় পড়ে গেলাম আমরা বাড়ির সবাই। জীন হুজুর যেনো আমাদের গ্রামে ঢুকলো সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহর লাল সালুর ভন্ড পীর মজিদের মতো। অল্প দিনেই জীন হুজুরের তেলেসমাতিতে লোকজন আমাদের বাড়িতে আনাগোনা করতে শুরু করতে লাগলো। ওই হুজুরের প্রবেশ ছিলো এইভাবে- একদিন বিকেলে হঠাৎ করে বাবার সাথে পরিচয় ঘটে রূপগনর জামে মসজিদে কোনো এক ওয়াক্ত নামাজের পর। বাবার সাথে কথাবার্তা বলতে বলতে আমাদের বাড়িতে ওঠেন জীন হুজুর। বাবাকে উনি বাপজি বলে ডেকে ফেলেন এবং এরপর থেকে নিয়মিত আমাদের বাড়িতে আসা-যাওয়া শুরু করেন। যখনি আমাদের বাড়িতে উনি আসতেন দুহাত ভর্তি নানা ফলমূল, মিষ্টি দ্রব্য ইত্যাদি নিয়ে আসতেন। আমরা তখনো জানিনা উনি জীন হুজুর, জীন আছে ওনার সাথে। ১৯৮৮ সালের পর এবার বয়াবহ বন্যা হলো। আমি থাকতাম দুচালা একটি টিনের ঘরে। জীন হুজুর এসে আমার রুমেই বেশি আড্ডা দিতেন। একদিন তার সাথে দুই তিনজন লোক আসলেন। রাতে তাদের নিয়ে আমার থাকার ঘরের মেঝেতে মাদুর বিছিয়ে জিকির আজগার শুরু করলেন। এক পর্যায় কোথা থেকে যেনো এক খানা আপেল এসে পড়লো। তখন জিকিররত সবাই ভয় পেয়ে গেলো। আরো জুড়ে জুড়ে সবাই জিকির করতে লাগলো। এভাবে আস্তে আস্তে জীন হুজুরের কার্যক্রম প্রকাশ পেতে থাকে। আমি পড়ে গেলাম জীন হুজুরের পাল্লায়। সাভারের নলাম ঘোড়াপীরের মাজার নিকটস্থ একটি বাড়িতে জীন হুজুর আস্তানা গেড়ে বসেন। দেশের নানা স্থান থেকে ভিন্ন ভিন্ন সমস্যা নিয়ে লোকজন জীন হুজুরের ওই নলামের আস্তানায় আসতেন।
সনঃ ১৩৯৬ বাং ১৯৮৯ ইং
বয়সঃ ১৩
তেরো বছর বয়সে এ যুগের ছেলেমেয়েরা এসএসসি পরীক্ষা দেয় আর আমি কিনা তেরোতে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র। একটু বড় সড় হয়ে গেলেও ছাত্র হিসেবে খারাপ ছিলাম না কখনোই। বরাবরই পাশ করেছি। পঞ্চম শ্রেণীতে আমার রোল নং ছিলো বারো। আর কিছু মনে পড়ে না।
সনঃ ১৩৯৭ বাং ১৯৯০ ইং
বয়সঃ ১৪
এবছর আমি ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র। ষষ্ঠ শ্রেণীতে আমার রোল হলো এগারো। বালক মন, নানা খেলাধুলায় কাটতো সারা বেলা। আমার পড়ার কোনো টেবিল ছিলোনা। আমার বই-পুষ্তক রাখতাম একখানা স্ট্রীলের ট্রাংকে। সন্ধ্যা বেলা পড়তে বসতাম সেই ট্রাংখানা খুলে। আমার যাবতীয় প্রয়োজনীয় জিনিষপত্র ওই ট্রাংকেই রেখে দিতাম। আমার পড়ালেখার কোনো চাপ ছিলোনা। আমি নিজের ইচ্ছায় পড়তে বসতাম আবার নিজের ইচ্ছাতেই পড়া থেকে ওঠতাম। বাবা কিংবা মা অথবা বড় ভাই কেউ কোনো দিন পড়ার জন্য শাসন করেনি। আমি ছোট বেলা থেকেই ছিলাম স্বাধীনচেতা। সুন্দরের পূজারী ছিলাম জ্ঞান হওয়ার পর থেকেই। পড়াশোনার পাশাপাশি কুটির শিল্পে বেশ আগ্রহী ছিলাম। পাখা বানানো, রোমালে ফুল তোলা, মাটি দিয়ে পুতুল বানানো, কুশিকাঁটা দিয়ে টুপি, গেঞ্জি ইত্যাদিও করেছি এই সময়। আর্টের প্রতি বেশ নেশা ছিলো। রং পেন্সিল দিয়ে সুন্দর সুন্দর বাণী আর্ট করে পড়ার ঘরে টাঙ্গিয়ে রাখতে পছন্দ করতাম। আবার সহপাঠী ও বন্ধুদেরকেও বাণীচিরন্তনী আর্ট করে উপহার দিতাম।
সনঃ ১৩৯৮ বাং ১৯৯১ ইং
বয়সঃ ১৫
সারা বছর পড়াশোনা না করলেও বার্ষিক পরীক্ষার সময় এলে পড়াশোনায় ভালই মন দিতাম। এবার আমি সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র। ক্লাশে ক্রমিক নং হলো ছয়। আমাদের ফোর্ডনগর থেকে আমরা কয়েকজন আলিয়া মাদ্রাসায় পড়তাম বাকিরা সবাই অধর চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়তো। ইয়াছিন, জহুরুল, মান্নান আর আমি এই চারজনই মাদ্রাসায় পড়তাম। বাবু, সুহিন, তুহিন ওরা পড়তো সাভার অধর চন্দ্র উচ্চবিদ্যালয়ে। আর সিকিম আলী কাকার ছেলে শহীদ এবং মহি ওরা দুই ভাই আমাদের সাথে ক্লাশ টু নাকি থ্রী পর্যন্ত মাদ্রাসায় পড়ালেখা করে ওদের পড়াশোনা বাদ পড়ে যায়।
সনঃ ১৩৯৯ বাং ১৯৯২ ইং
বয়সঃ ১৬
এবার আমি এইটের ছাত্র, রোল নং নেমে এলো এক স্তর নিচে অর্থাৎ এবার দাঁড়ালাম ৭ এ। পড়াশোনায় মনোযোগী হতে হবে আরো। তাছাড়া দুবছর পরই দাখিল পরীক্ষা মানে বোর্ডের পরীক্ষা। ইংরেজিতে ভাল মার্কস না পেলেও এই সাবজেক্টটির প্রতি আমার আগ্রহ ছিল ব্যাপক। চাইতাম ইংরেজদের মতো করে ইংরেজি বলতে। আমি কোনোদিন কারো তাগিদে পড়াশোনা করিনি। নিজের আগ্রহে পড়াশোনা করেছি। তাছাড়া আমার অভিভাবকগণও কোনদিন পড়াশোনার জন্য তাগিদ দেয়নি। এই দিক থেকে আমি ছিলাম স্বাধীন চেতা এক বালক। ছোটবেলা থেকে নামাজি ছিলাম। বাড়ির কাছে মসজিদ ছিলো না। কয়েকটি বাড়ি পেরুতে হতো মসজিদে পৌছতে। সড়ক দিয়ে হেঁটে বা বাড়িগুলোর উপর দিয়ে দুই ভাবেই মসজিদে যেতাম নামাজের জন্য। রিপনদের বাড়ি হয়ে সুহিনদের উঠান পেরুতাম। সুহিন আমার প্রিয় বন্ধু। সম্পর্কে সুহিন আমার ভাগ্নে হলেও ব্ন্ধুত্বের বন্ধনটাই দিনদিন গাঢ় হয়ে ওঠলো। অন্যান্য ছেলেদের সাথে মিশতে পছন্দ না করলেও সুহিনের মা এবং বাবা আমার সাথে উঠাবসা করতে উদ্ভুদ্ধ করতো।
সনঃ ১৪০০ বাং ১৯৯৩ ইং
বয়সঃ ১৭
সতের বছরের বালক আমি। পড়ি ক্লাস নাইনে। রোল নম্বর ফিরে পেলাম ছয়। উল্লেখ্য যে, ক্লাস সেভেনেও আমার রোল ছিলো ছয়। আগামী বছর বোর্ডের পরীক্ষায় অংশগ্রহন। ক্লাসের প্রথম রোল নং ছিলো মাসুদের। কয়েকজন সহপাঠীর নাম মনে পড়ে গেলো, ওরা হলো- আসাদ (কাজী মোকমাপাড়া), মোয়াজ্জ্বেম (আড়াপাড়া), রশিদ (নামাগেন্ডা), মাসুদ (বাজার বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন)। আরো অনেকের নাম এখন সহজে মনে পড়ে না। যোগাযোগের অভাবে আস্তে আস্তে বিস্মৃতির পাতায় চলে যাবে অনেক অন্তরঙ্গ বন্ধুরা।
সনঃ ১৪০১ বাং ১৯৯৪ ইং
বয়সঃ ১৮
আঠারো বছরের কিশোর দশম শ্রেণীর ছাত্র আমি। এবার আমার ক্লাসরোল হলো দুই। এবছরই দাখিল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলো। দাখিল হলো এস এস সি সমমানের মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা। দাখিল পরীক্ষায় আমার রেজিস্ট্রেশন নম্বর ছিল ১৪৪০০ এবং রোল ছিল ১০৬৯৮। ১৯৯৪ এর ৭ ডিসেম্বর আমাদের বসতভিটার ঠিকানা তৃতীয়বারের মতো পরিবর্তিত হলো। ফোর্ডনগর থেকে আজকের রূপনগরে এলাম।
১৪০০ সাল
আজি হতে শতবর্ষ পরে
কে তুমি পড়িছ বসি আমার কবিতা খানি
কৌতুহল ভরে
আজি হতে শতবর্ষ পরে
আজি নব বসন্তের প্রভাতের আনন্দের
লেশমাত্র ভাগ
আজিকার কোনো ফুল, বিহঙ্গের কোনো রাগ
অনুরাগে সিক্ত করি পারিব না পাঠাইতে
তোমাদের করে
আজি হতে শতবর্ষ পরে....
সনঃ ১৪০১ বাং ১৯৯৪ ইং
বয়সঃ ১৮
আঠারো বছরের কিশোর দশম শ্রেণীর ছাত্র আমি। এবার আমার ক্লাসরোল হলো দুই। এবছরই দাখিল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলো। দাখিল হলো এস এস সি সমমানের মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা। দাখিল পরীক্ষায় আমার রেজিস্ট্রেশন নম্বর ছিল ১৪৪০০ এবং রোল ছিল ১০৬৯৮। ১৯৯৪ এর ৭ ডিসেম্বর আমাদের বসতভিটার ঠিকানা তৃতীয়বারের মতো পরিবর্তিত হলো। ফোর্ডনগর থেকে আজকের রূপনগরে এলাম।
সনঃ ১৪০২ বাং ১৯৯৫ ইং
বয়সঃ ১৯
বয়সঃ ১৯
আ্ল্লাহর রহমতে আমি ১ম বিভাগে দাখিল পাশ করলাম। মাদ্রাসায় পড়াশোনা দাখিল পর্যন্তই সীমাবদ্ধ রইলো। আমার ইচ্ছা হলো বাংলা-ইংরেজি লাইনে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার। সুতরাং একাদ্বশ শ্রেণীতে মানবিক বিভাগে সাভার কলেজে ভর্তি হলাম। ক্লাশ রোল ছিল ১৮৩২। আমার পড়াশোনায় পারিবারিক দিক থেকে কোনো বাঁধার সম্মুখিন হইনি। আমি ছিলাম স্বাধীনচেতা প্রাণ। তাই নিজের ইচ্ছায় কলেজে ভর্তি হলাম। পড়াশোনা চালিয়ে যেতে লাগলাম। আমার সংগ্রামী জীবন এখান থেকেই শুরু। পড়াশোনার খরচ চালাতে বাবার পক্ষে অনেক সময় হিমশিম হয়ে পড়তো। কলেজে ভর্তি করেদিয়ে ছিলেন বাবার পরিচিত সাভার কলেজের প্রাণীবিদ্যার প্রফেসার.... দ্বারা। তার সুপারিশে প্রায় অর্ধেক টাকা কমে ভর্তি হতে পেরেছিলাম।
পড়াশোনার ফাঁকেফাঁকে টিউশনি করে পড়াশোনার কিছু খরচ চালিয়ে যেতে লাগলাম। পাঁচ ভায়ের মধ্যে আমি ৪র্থ। বড় ভাই আব্দুর রশিদ গেল বছর মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান। তার আয়-রোজগার ভালই ছিলো। তিনি ইচ্ছে করলে পারতেন বাবা-মায়ের সংসারটা পরিচালনা করতে। তাই যদি করতেন তাহলে আমার পড়াশোনার খরচের জন্য বাবাকেও একটা চিন্তা করতে হতো না। পরীক্ষার ফি দিতে অন্যের কাছ থেকে ধার করতে হতো টাকা। আমাদের সংসারটা দরিদ্রোটার টানে ঘুরতে লাগলো। বাবার বয়স প্রায় ৫০/৫৫ হবে। তিনি এই বয়সেও সংসারের কথা চিন্তা করে বসে থাকতেন না। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে আমাদের ছোট-ভাই বোনদের নিয়ে কোনো রকম সংসার চালাতে লাগলেন। এক সময় টাকা-পয়সা ছিল, তখন পরিচিত ছিল বড় বড় মহাজন। সাভার বাজারে আমাদের গুড়ের আড়ৎ ছিলো। ব্যবসা ছিলো রমরমা। আজ সেসব শুধু স্মুতি। গল্পের মতো শুনতাম বাবার কাছে।এই বয়সে আমি বুঝতে পারতাম বাবার কষ্টটা। তাই মনে মনে ভাবতাম একদিন বড় হয়ে বাবার এই কষ্টগুলো আমি লাগব করবো। বাবাকে রোদে পুড়ে অন্যের টাকায় ব্যবসা করতে হাটে হাটে বেরুতে দিবোনা। আমি ধরবো সংসারের হাল।
সনঃ ১৪০৩ বাং ১৯৯৬ ইং
বয়সঃ ২০
কলেজে এসে পড়াশোনা খারাপ হয়নি। দারিদ্রতায় আবদ্ধ ছিলাম বটে কিন্তু পড়াশোনার খরচ চালাতে নিজের প্রচেষ্টাকে কাজে লাগিয়েছি। টিউশনি করে বই-খাতা, নিজের প্রাইভেট টিউটরের বেতন ইত্যাদি খরচ ওঠে আসতো। তারপরও সার্বিক ভাবে খরচের জন্য বাবার দ্বারস্থ হতে হতো। কলেজ জীবনে অনেক নতুন নতুন বন্ধ-বান্ধবদের সাথে পরিচয় ঘটে। জীবনেরও বিকাশ ঘটে দ্রুত। অনেক না জানা বিষয়ে নতুন করে অবগত হই। ইংরেজি শেখার বিষয়ে অনেক আগে থেকেই আগ্রহী ছিলাম। চটপট করে ইংরেজি বলা এবং ইংরেজদের সাথে কথাবার্তা বলতে পারা খুব আগ্রহের বিষয় ছিলো। কলেজ লাইফে অনেক বন্ধুদের মধ্যে সাজেদুলের কথা উল্লেখযোগ্য। ওর অনুপ্রেরণা এবং প্রচেষ্টায় নিজেকে বিকাশের নতুন নতুন পথ খুঁজে পেয়েছি। অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে সাজেদুলের সাথে। ঢাকার সেন্ট্রাল রোডে ওদের বাড়ি। পড়াশোনা করেছে সাভার কলেজে। কলেজে পড়াশোনার সময় ও পেয়িংগ্যাস্ট হিসেবে থাকতো সাভারের বিপিএটিসিতে। এসময় পড়াশোনার পাশাপাশি সাজেদুল আর আমি সেল্ফ (CELP- Certificate in English Language Proficiency) এ ভর্তি হলাম। সেল্ফ হলো ইংরেজি ভাষা শেখার একটি অনন্য প্রোগ্রাম। দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সেল্ফ এর শাখা ছিলো। আমাদের সাভার কলেজেও এর একটি শাখা পরিচালিত হতো। এই শাখাটি পরিচালনা করতেন সাভার কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষিকা নিশাত পারভিন। সেল্ফ এ ভর্তি হয়ে ইংরেজি শেখার বিষয়ে আরো অনুপ্রাণিত হলাম।
শীতের বিকেলে কলেজ থেকে ফিরতে যখন সন্ধ্যা হয়ে আসতো, বংশীর পশ্চিম পাড়ে তখন কুয়াশার হাল্কা চাদর গোধুলিকে ঢেকে দিতো, আজো ওই ছবিটা ছায়াছবির মতো দুনয়নে ভাসে।
সনঃ ১৪০৪ বাং ১৯৯৭ ইং
বয়সঃ ২১
দু বছর কলেজ লাইফ শেষে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষায় অংশগ্রহন এবং এ বছরেই প্রথম বিভাগে পাশ করলাম। এই বছরে আমার জীবনের একটি স্মরনীয় দিন রয়ে গেলো। বছরটি যেমনি অনেক খুশির খবর এনেদিয়েছিলো তেমনি ঝরা পাতার মতো প্রিয় একজন ঘনিষ্ঠ মানুষ হারালাম।সেটা ছিলো ১১ জুন বুধবার, হারিয়েছি একজন অন্তরঙ্গ বন্ধকে। ওর নাম ছিলো জাহিদুর রহমান সুহিন। সুহিন বলেই সবাই জানতো। বাল্যকাল থেকে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠেছিলো সুহিনের সাথে। ওর অস্বাভাবিক মৃত্যুটা আমি সহজ করে মেনে নিতে পারিনি অনেকদিন।ও যেমন আমাকে ছাড়া অন্য কারো সাথে এতটা ঘনিষ্ঠ ছিলোনা আর আমার বেলাতেও তাই ছিলো।
পড়াশোনার পাশাপাশি ঘরে বসে একটু আকটু প্রিন্টি/প্রেসের কাজ করেছি। স্ক্রীন প্রিন্ট শিখে স্ক্রীন প্রিন্টের যাবতীয় সরঞ্জাম কিনে নিয়েছিলাম এ থেকে সামান্য আয়ও করতে লাগলাম এসময়। টিউশনি করেও কিছু আয় রোজগার হতো। ইন্টার পাশ করার পর ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার জন্য পড়াশোনা করেছি মোটামুটি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গিনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এই তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিলাম কিন্তু কাজ হলো না। তবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অপেক্ষমান তালিকায় ছিলাম ভূগোল বিভাগ থেকে কিন্তু সেও হলো না দেরিতি জানতে পেরে।অভাব ছিলো তাই ভর্তি কোচিং করতে পারিনি। যা পড়েছিলাম নিজেই ঘরে বসে। ঝরে গেলো ভার্সিটি ভর্তির স্বপ্ন। ভর্তি হলাম পাস কোর্সে সাভার কলেজে।
সনঃ ১৪০৩ বাং ১৯৯৬ ইং
বয়সঃ ২০
কলেজে এসে পড়াশোনা খারাপ হয়নি। দারিদ্রতায় আবদ্ধ ছিলাম বটে কিন্তু পড়াশোনার খরচ চালাতে নিজের প্রচেষ্টাকে কাজে লাগিয়েছি। টিউশনি করে বই-খাতা, নিজের প্রাইভেট টিউটরের বেতন ইত্যাদি খরচ ওঠে আসতো। তারপরও সার্বিক ভাবে খরচের জন্য বাবার দ্বারস্থ হতে হতো। কলেজ জীবনে অনেক নতুন নতুন বন্ধ-বান্ধবদের সাথে পরিচয় ঘটে। জীবনেরও বিকাশ ঘটে দ্রুত। অনেক না জানা বিষয়ে নতুন করে অবগত হই। ইংরেজি শেখার বিষয়ে অনেক আগে থেকেই আগ্রহী ছিলাম। চটপট করে ইংরেজি বলা এবং ইংরেজদের সাথে কথাবার্তা বলতে পারা খুব আগ্রহের বিষয় ছিলো। কলেজ লাইফে অনেক বন্ধুদের মধ্যে সাজেদুলের কথা উল্লেখযোগ্য। ওর অনুপ্রেরণা এবং প্রচেষ্টায় নিজেকে বিকাশের নতুন নতুন পথ খুঁজে পেয়েছি। অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে সাজেদুলের সাথে। ঢাকার সেন্ট্রাল রোডে ওদের বাড়ি। পড়াশোনা করেছে সাভার কলেজে। কলেজে পড়াশোনার সময় ও পেয়িংগ্যাস্ট হিসেবে থাকতো সাভারের বিপিএটিসিতে। এসময় পড়াশোনার পাশাপাশি সাজেদুল আর আমি সেল্ফ (CELP- Certificate in English Language Proficiency) এ ভর্তি হলাম। সেল্ফ হলো ইংরেজি ভাষা শেখার একটি অনন্য প্রোগ্রাম। দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সেল্ফ এর শাখা ছিলো। আমাদের সাভার কলেজেও এর একটি শাখা পরিচালিত হতো। এই শাখাটি পরিচালনা করতেন সাভার কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষিকা নিশাত পারভিন। সেল্ফ এ ভর্তি হয়ে ইংরেজি শেখার বিষয়ে আরো অনুপ্রাণিত হলাম।
শীতের বিকেলে কলেজ থেকে ফিরতে যখন সন্ধ্যা হয়ে আসতো, বংশীর পশ্চিম পাড়ে তখন কুয়াশার হাল্কা চাদর গোধুলিকে ঢেকে দিতো, আজো ওই ছবিটা ছায়াছবির মতো দুনয়নে ভাসে।
সনঃ ১৪০৪ বাং ১৯৯৭ ইং
বয়সঃ ২১
দু বছর কলেজ লাইফ শেষে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষায় অংশগ্রহন এবং এ বছরেই প্রথম বিভাগে পাশ করলাম। এই বছরে আমার জীবনের একটি স্মরনীয় দিন রয়ে গেলো। বছরটি যেমনি অনেক খুশির খবর এনেদিয়েছিলো তেমনি ঝরা পাতার মতো প্রিয় একজন ঘনিষ্ঠ মানুষ হারালাম।সেটা ছিলো ১১ জুন বুধবার, হারিয়েছি একজন অন্তরঙ্গ বন্ধকে। ওর নাম ছিলো জাহিদুর রহমান সুহিন। সুহিন বলেই সবাই জানতো। বাল্যকাল থেকে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠেছিলো সুহিনের সাথে। ওর অস্বাভাবিক মৃত্যুটা আমি সহজ করে মেনে নিতে পারিনি অনেকদিন।ও যেমন আমাকে ছাড়া অন্য কারো সাথে এতটা ঘনিষ্ঠ ছিলোনা আর আমার বেলাতেও তাই ছিলো।
পড়াশোনার পাশাপাশি ঘরে বসে একটু আকটু প্রিন্টি/প্রেসের কাজ করেছি। স্ক্রীন প্রিন্ট শিখে স্ক্রীন প্রিন্টের যাবতীয় সরঞ্জাম কিনে নিয়েছিলাম এ থেকে সামান্য আয়ও করতে লাগলাম এসময়। টিউশনি করেও কিছু আয় রোজগার হতো। ইন্টার পাশ করার পর ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার জন্য পড়াশোনা করেছি মোটামুটি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গিনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এই তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিলাম কিন্তু কাজ হলো না। তবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অপেক্ষমান তালিকায় ছিলাম ভূগোল বিভাগ থেকে কিন্তু সেও হলো না দেরিতি জানতে পেরে।অভাব ছিলো তাই ভর্তি কোচিং করতে পারিনি। যা পড়েছিলাম নিজেই ঘরে বসে। ঝরে গেলো ভার্সিটি ভর্তির স্বপ্ন। ভর্তি হলাম পাস কোর্সে সাভার কলেজে।
সনঃ ১৪০৫ বাং ১৯৯৮ ইং
বয়সঃ ২২
এ বছর দেশে ভয়াবহ বন্যা কবলিত হয়। প্লাবিত হয় দেশের অধিকাংশ জেলাগুলো। আমাদের বাড়িতে বন্যার পানি ঢুকে করে। ওঠান ছাড়িয়ে বন্যার পানি প্রবেশ করে ঘরে। আমার পড়ার রুমে পানি ছিলো খাটের নিচে আর চার আঙ্গুল পানি বাড়লে আমার শোবার বিছানা ভিজে যেতো বন্যার পানিতে। এই বন্যায় অনেক ক্ষতি সাধিত হয়। বন্যার আগে আমাদের সাথে এক জীন হুজুরের পরিচয় ঘটে। ওই জিন হুজুরের পাল্লায় পড়ে গেলাম আমরা বাড়ির সবাই। জীন হুজুর যেনো আমাদের গ্রামে ঢুকলো সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহর লাল সালুর ভন্ড পীর মজিদের মতো। অল্প দিনেই জীন হুজুরের তেলেসমাতিতে লোকজন আমাদের বাড়িতে আনাগোনা করতে শুরু করতে লাগলো। ওই হুজুরের প্রবেশ ছিলো এইভাবে- একদিন বিকেলে হঠাৎ করে বাবার সাথে পরিচয় ঘটে রূপগনর জামে মসজিদে কোনো এক ওয়াক্ত নামাজের পর। বাবার সাথে কথাবার্তা বলতে বলতে আমাদের বাড়িতে ওঠেন জীন হুজুর। বাবাকে উনি বাপজি বলে ডেকে ফেলেন এবং এরপর থেকে নিয়মিত আমাদের বাড়িতে আসা-যাওয়া শুরু করেন। যখনি আমাদের বাড়িতে উনি আসতেন দুহাত ভর্তি নানা ফলমূল, মিষ্টি দ্রব্য ইত্যাদি নিয়ে আসতেন। আমরা তখনো জানিনা উনি জীন হুজুর, জীন আছে ওনার সাথে। ১৯৮৮ সালের পর এবার বয়াবহ বন্যা হলো। আমি থাকতাম দুচালা একটি টিনের ঘরে। জীন হুজুর এসে আমার রুমেই বেশি আড্ডা দিতেন। একদিন তার সাথে দুই তিনজন লোক আসলেন। রাতে তাদের নিয়ে আমার থাকার ঘরের মেঝেতে মাদুর বিছিয়ে জিকির আজগার শুরু করলেন। এক পর্যায় কোথা থেকে যেনো এক খানা আপেল এসে পড়লো। তখন জিকিররত সবাই ভয় পেয়ে গেলো। আরো জুড়ে জুড়ে সবাই জিকির করতে লাগলো। এভাবে আস্তে আস্তে জীন হুজুরের কার্যক্রম প্রকাশ পেতে থাকে। আমি পড়ে গেলাম জীন হুজুরের পাল্লায়। সাভারের নলাম ঘোড়াপীরের মাজার নিকটস্থ একটি বাড়িতে জীন হুজুর আস্তানা গেড়ে বসেন। দেশের নানা স্থান থেকে ভিন্ন ভিন্ন সমস্যা নিয়ে লোকজন জীন হুজুরের ওই নলামের আস্তানায় আসতেন।
আমি ইন্টার পরীক্ষা দিয়ে অবসর সময় কাটাচ্ছি আর হুজুরের পিছেপিছে দৃঢ় শ্রদ্ধা ভক্তি নিয়ে ঘুরে কাটালাম এবছরের পুরো সময়। বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার পড়াশোনায় মনোযোগ হারিয়ে হুজুরের পিছেই ঘুরে বেড়াই। জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনের সাথে হুজুরের হৃদ্ধতা আছে জানিয়ে হুজুর আমাকে নিশ্চিন্ত করে পরীক্ষার ব্যাপারে। বিশ্ববিদ্যলয়ে ভর্তির পুরো দায়িত্ব হুজুরের ওপর ছেড়ে দিয়ে আমি পড়াশোনা থেকে দূরে সরে পড়ি। কিন্তু পরিশেষে হুজুরের সব কথা মিথ্যা প্রামানীত হলো। আমাকে ভর্তির ব্যাপারে তিনি কোনো প্রকার সহায়তা করেননি বরং আমার সময় নষ্ট করেছেন। একটি বছর পিছিয়ে পড়লাম। এরপরও ঢাকা ভার্সিটি, জাহাঙ্গীনগর ভার্সিটি এবং জগন্নাথ ভার্সিটিতে ভর্তি পরীক্ষা দেই। কিন্তু চাঞ্জ পেলামনা কোখাও। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভূগোল বিভাবে উইটিং লিস্টে নাম থাকলেও দেরিতে যোগাযোগ করার ফলে সেটিও গেলো। পড়াশোনার গতি আঁকাবাঁকা নদীর মতো মন্থর হয়ে চলতে লাগলো। আর্থিক টানাপোড়েন ছিলো তাই ভাল কোনো কোটিং সেন্টারে ভর্তি হতে পারলাম না। বন্ধুরা অনেকেই বিভিন্ন ভার্সিটিতে চাঞ্জ পেয়ে পড়াশোনা শুরু করে ফেলে। আমি অবশেষে সাভার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে স্নাতক শ্রেনীতে ভর্তি হলাম। দুই বছরের পাস কোর্সে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে লাগলাম।
সনঃ ১৪০৬ বাং ১৯৯৯ ইং
বয়সঃ ২৩
ডায়েরি লেখা শুরু করেছিলাম ১৯৯৬ থেকে। কালী প্রসন্ন দাস তপন স্যার ছিলেন সাভার কলেজের যুক্তিবিদ্যার প্রভাষক। তার একদিনের ল্যাকচার থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে প্রথম ডায়েরি লেখা শুরু করি। বয়স তেইশ। আজকের দিনের ছেলেমেয়েদের মতো একটা আধুনিক ছিলাম না। বোকা টাইপের ছিলাম। মাথা ভর্তি চুল ছিলো। কুঁকড়ানো চুল। চুলে কখনো শ্যাম্পূ করতাম না। এরোমেটিক সাবান ব্যবহার করতাম। শারীরিক কোনো যত্ন মাথায় ছিলোনা। ঘুরে বেড়াতাম এপাড়া থেকে ওপাড়ায়। ছন্নছাড়া যুবক। এই বয়ষে অনেকেই গার্লফ্রেন্ড / বিয়ে / অনেক রকম ইন্টাটেইনম্যান্ট ইত্যাদি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করে কিন্তু আমার ব্যাপারটা ছিলো টুটালি অন্যরকম, এসবের বিন্দু মাত্র চিন্তা মাথায় ছিলোনা। তবে একটা জিনিস ছিলো মাথায়- আমাকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে, আয় রোজগার করতে হবে, সংসারের হাল ধরতে হবে। নিজেকে নিয়ে কোনো প্রকার ভবিষ্যত পরিকল্পনা মোটেও ছিলোনা। সময় গড়িয়ে যেতে লাগলো।
সনঃ ১৪০৭ বাং ২০০০ ইং
বয়সঃ ২৪
মিলিনিয়াম ইয়ার ২০০০ সারা বিশ্ব বরণ করলো সাদর আমন্ত্রনে। এ বছর স্নতক পাশ করলাম। অর্জন হলো ২য় বিভাগ। মাত্র ১২ নম্বরের জন্য ১ম বিভাগ কপালে জোটলো না। আক্ষেপ রয়ে গেলো। পড়াশোনা আর কত আর মনে হয় হবার নয়। এরপরও ধীর গতিতে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করলাম। ঢাকা বাংলা কলেজে ইসলামিক স্টাডিজ নিয়ে মাস্টার ডিগ্রীতে ভর্তি হলাম। কিন্তু পড়াশোনা আর হলো না, ভর্তি পর্যন্তই রয়ে গেলো। ইতি হলো পড়াশোনা। এবার আমাকে কিছু করতেই হবে। টিউশনি করে আর কয় টাকা আসে। সংসার ও দিয়ে চলবে না। তাছাড়া কম্পিউটার শিখলাম এতেও তো এগুতে পারছিনা। নানা চিন্তা মাথায় ঘুরপাঁক করে। একটা এনজিও প্রতিষ্ঠানে খন্ডকালীন চাকরি নিলাম। এনজিও টার নাম ছিলো "ভিলেজ এ্যাসোসিয়েশন ফর স্যোসাল ডেভেলপমেন্ট" (ভাসড) ্। ভাসড এর সৌজন্যে দায়িত্ব পেলাম বয়স্ক শিক্ষার বিস্তার ঘটাতে। উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রমে বয়ষ্ক শিক্ষা একটি গুরুত্বপূর্ন বিষয়। ১০ মাসের একটি প্রজেক্ট পেয়ে যায় ভাসড। ধামরাই থানাধীন কুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নং (বর্তমানে ৯ নং) ওয়ার্ডে ফোর্ডনগর দক্ষিন পাড়া, ফোর্ডনগর উত্তর পাড়া (ফকির পাড়া) চৌটাইল, রূপনগর এই ৪টি গ্রামে শুরু হয় বয়স্ক শিক্ষা কার্যক্রম। ধামরাই থানার ১৬টি ইউনিয়ন থেকে প্রায় ৩০/৪০ জন সুপারভাইজারকে ১০দিনের প্রশিক্ষনের জন্য স্ব স্ব এনজিওর মাধ্যমে পাঠানো হয় ফরিদপুর পিটিআই তে । ভাসড থেকে ছিলাম আমরা দুজন। জামান ভাই আর আমি। সে ছিলো এক অন্য রকম অনুভূতি। ফরিদপুরের পিটিআই আর সেই ১০ দিন এখনো নাড়া দিয়ে যায় মনের গভীরে। আমরা ১০দিনের প্রশিক্ষন নিয়ে চলে এলাম স্ব স্ব এলাকায়। জামান ভাই আর আমার দায়িত্বে পড়ে উপরোক্ত ৪টি গ্রামে ৩০টি শিক্ষা কেন্দ্র গঠন করা এবং ৩০ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগ দেয়া। শিক্ষা কেন্দ্র এবং শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগের পর তাদেরকে স্থানীয় প্রাইমারি স্কুলে ১০দিনের প্রশিক্ষন দেয়া হয়। প্রশিক্ষক হিসেবে ছিলাম আমরা দুজন। এরপর শুরু হয় ১০ মাসের প্রকল্প। আমার দায়িত্বে আসে ১৫টি কেন্দ্রের। ভাসডে কাজ করে কর্মজীবনের অনেক দিক নতুন করে জানতে এবং বুঝতে পারলাম। এভাবে সামান্য আর্থিক যোগান দিতে সক্ষম হলেও সংসারে একটা ভূমিকা পালন করার মতো কিছু করতে পেরে ওঠতে পারিনি।
সনঃ ১৪০৯ বাং ২০০২ ইং
সনঃ ১৪০৮ বাং ২০০১ ইং
বয়সঃ ২৫
সময় তার নিজস্ব গতিতে চলতে লাগলো, বয়স দাড়ালো পঁচিশে। ডায়রি লেখার অভ্যাসটা রয়ে গেছে। যা মন চায় তাই লিখি। রোজকার ঘটনা লিখি, লিখি মনের ভেতর যা আসে। সুখ কিংবা দু্ঃখের কথা, আনন্দ-হর্স-উল্লাসের কথা। সাভার কলেজ থেকে স্নাতক পাশ করার পর মিরপুর (ঢাকা) বাংলা কলেজে মাস্টার্সে ইসলামিক স্টাডিজে ভর্তি হলাম। কিন্তু পড়াশোনার ওখানেই ইতি। ক্লাস করাও হলোনা, পড়াশোনাও আর এগুলোনা। এই সময়টা এক প্রকার সিদ্ধান্তহীনতার মধ্যে কাটতে লাগলো। অনেক তো হলো এখন একটা আয়ের উৎস বের করা খুব প্রয়োজন। কিন্তু কি করবো, ভেবে কোনো কূল-কিনারায় উপনীত হতে পারছিলাম না।
সময় তার নিজস্ব গতিতে চলতে লাগলো, বয়স দাড়ালো পঁচিশে। ডায়রি লেখার অভ্যাসটা রয়ে গেছে। যা মন চায় তাই লিখি। রোজকার ঘটনা লিখি, লিখি মনের ভেতর যা আসে। সুখ কিংবা দু্ঃখের কথা, আনন্দ-হর্স-উল্লাসের কথা। সাভার কলেজ থেকে স্নাতক পাশ করার পর মিরপুর (ঢাকা) বাংলা কলেজে মাস্টার্সে ইসলামিক স্টাডিজে ভর্তি হলাম। কিন্তু পড়াশোনার ওখানেই ইতি। ক্লাস করাও হলোনা, পড়াশোনাও আর এগুলোনা। এই সময়টা এক প্রকার সিদ্ধান্তহীনতার মধ্যে কাটতে লাগলো। অনেক তো হলো এখন একটা আয়ের উৎস বের করা খুব প্রয়োজন। কিন্তু কি করবো, ভেবে কোনো কূল-কিনারায় উপনীত হতে পারছিলাম না।
সনঃ ১৪০৯ বাং ২০০২ ইং
বয়সঃ ২৬
সময় কারো জন্য অপেক্ষা করে না। সময় চলে যায় তার নিজের গতিতে। ২৬ বছরের বেকার যুবক। প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা যা হবার হলো। একটা চাকরির খুব প্রয়োজন। শামীম ভায়ের সাথে যোগাযোগটা বেড়ে গেলো। কিছু একটা করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রইলো বছর জুড়ে। অনুঘটক নামের একটি দারিদ্র বিমোচন সংগঠনে সময় দিয়ে কিছু একটা শিখতে এবং করর চেষ্টা করেছি। শামীম ভাই সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা। প্রায় সময় শামীম ভাইদের সাভার মধ্যপাড়ার বাসায় গিয়ে অনুঘটকের মিটিং এ সময় দিয়েছি। আমি ছাড়াও যারা অনুঘটকের সাথে জড়িতো ছিলেন তারা হলেন- চাচাতো ভাই জসীম, রেস্ট্রি অফিসের লিটন ভাই, ভাগলপুরের হিরক ভাই। শামীম ভাই আমাকে বেশ বিছু বই-পুস্তক পড়তে দিতেন সচিব পর্যায়ে জ্ঞানার্জনের জন্য। একটি সংগঠন পরিচালনার জন্য কি কি দক্ষতা, অভিজ্ঞতা থাকা প্রয়োজন এসব। কিন্তু মাথায় কিছু ঢুকতো না। এভাবে ঘুরেফিরে সময় বংশী নদীর স্রোতের মতো ধীরে ধীরে চলে যেতে লাগলো।
সময় কারো জন্য অপেক্ষা করে না। সময় চলে যায় তার নিজের গতিতে। ২৬ বছরের বেকার যুবক। প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা যা হবার হলো। একটা চাকরির খুব প্রয়োজন। শামীম ভায়ের সাথে যোগাযোগটা বেড়ে গেলো। কিছু একটা করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রইলো বছর জুড়ে। অনুঘটক নামের একটি দারিদ্র বিমোচন সংগঠনে সময় দিয়ে কিছু একটা শিখতে এবং করর চেষ্টা করেছি। শামীম ভাই সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা। প্রায় সময় শামীম ভাইদের সাভার মধ্যপাড়ার বাসায় গিয়ে অনুঘটকের মিটিং এ সময় দিয়েছি। আমি ছাড়াও যারা অনুঘটকের সাথে জড়িতো ছিলেন তারা হলেন- চাচাতো ভাই জসীম, রেস্ট্রি অফিসের লিটন ভাই, ভাগলপুরের হিরক ভাই। শামীম ভাই আমাকে বেশ বিছু বই-পুস্তক পড়তে দিতেন সচিব পর্যায়ে জ্ঞানার্জনের জন্য। একটি সংগঠন পরিচালনার জন্য কি কি দক্ষতা, অভিজ্ঞতা থাকা প্রয়োজন এসব। কিন্তু মাথায় কিছু ঢুকতো না। এভাবে ঘুরেফিরে সময় বংশী নদীর স্রোতের মতো ধীরে ধীরে চলে যেতে লাগলো।
সনঃ ১৪১০ বাং ২০০৩ ইং
বয়সঃ ২৭
ITC ( Information Technology Center) পরবর্তীতে আইটিসি ডট নেট নামে একটি প্রতিষ্ঠান চালু করেন শামীম ভাই। রেস্ট্রি অফিসে দুটি রুম ভাড়া নিয়ে শুরু করেন তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক সেবা কার্যক্রম। শামীম ভায়ের মূল ইচ্ছা- তথ্য প্রযুক্তিকে সার্বিক ভাবে ছড়িয়ে দেয়া। সেই লক্ষ্যে কাজ চালিয়ে যান। আমিও তার সাথে যুক্ত হয়ে পড়লাম। যে সেবাগুলো চালু ছিলো- কম্পিউটার ট্রেইনিং, পল্লীফোন সার্ভিস (এটি আমি সংযুক্ত করি), কুরিয়ার সার্ভিস ইত্যাদি।
ITC ( Information Technology Center) পরবর্তীতে আইটিসি ডট নেট নামে একটি প্রতিষ্ঠান চালু করেন শামীম ভাই। রেস্ট্রি অফিসে দুটি রুম ভাড়া নিয়ে শুরু করেন তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক সেবা কার্যক্রম। শামীম ভায়ের মূল ইচ্ছা- তথ্য প্রযুক্তিকে সার্বিক ভাবে ছড়িয়ে দেয়া। সেই লক্ষ্যে কাজ চালিয়ে যান। আমিও তার সাথে যুক্ত হয়ে পড়লাম। যে সেবাগুলো চালু ছিলো- কম্পিউটার ট্রেইনিং, পল্লীফোন সার্ভিস (এটি আমি সংযুক্ত করি), কুরিয়ার সার্ভিস ইত্যাদি।
সনঃ ১৪১১ বাং ২০০৪ ইং
বয়সঃ ২৮
বয়স দাঁড়ালো আঠাইশে। কম্পিউটার সেন্টার ছেড়ে দিয়ে বড় ভাই আব্দুর রশিদের সহায়তায় সংযুক্ত আরব আমিরাতে পাড়ি দিলাম। যাত্রা শুরু প্রবাস জীবনের। ৫ ফেব্রয়ারি, ২০০৪ বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে ঢাকা জিয়া আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে মুম্বাই ছত্রপতি বিমান বন্দর হয়ে দুবাই আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে অবতরণ। আমাকে রিসিভ করার জন্য বড় ভাই এবং তার এক বন্ধু বিমান বন্দরে অপেক্ষায় ছিলেন। আমাকে রিসিভ করে সরাসরি নিয়ে আসেন দুবাই গ্র্যান্ড হোটেলে এবং হোটেলের ফাইন্যান্স কন্ট্রোলারের সাথে সাক্ষাত করান।
ইনশাআল্লাহ চলবে....